Find Us OIn Facebook


 সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমেরিকান সাইকোলজি অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) গত মঙ্গলবার যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিষয়ক কিছু পরামর্শ প্রকাশ করেছে। এতে তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য সুবিধার পাশাপাশি ঝুঁকিগুলো কী, সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। 

পরামর্শে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাবগুলো মূলত ব্যক্তি মানসিক অবস্থা, সামাজিক পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন প্লাটফর্মে উপলব্ধ নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর (ফিচার ও কনন্টেন্ট) ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল বলে জানানো হয়েছে।

ডিজিটাল যুগে শিশু ও কিশোরদের জন্য কোন বিষয়টি মঙ্গলজনক হবে তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, নীতিনির্ধারক, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে প্রমাণভিত্তিক ১০টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। 

১. স্বাস্থ্যকর সামাজিকীকরণকে উৎসাহিত করা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সামাজিকীকরণের বিভিন্ন চর্চায় যুক্ত হওয়ার জন্য কম বয়সী তথা কিশোর উৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছে।

২. উন্নয়নমূলক সক্ষমতা বৃদ্ধি: সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ও এর কার্যকারিতা মূলত তরুণ ব্যবহারকারীদের বিকাশ সক্ষমতা অনুসারে তৈরি করা উচিত। কারণ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যা প্রযোজ্য তা কিশোর ব্যবহারকারীর জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। 

৩. পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান: প্রাথমিক বয়ঃসন্ধিকালে (১০-১৪ বছর)  শিশু-কিশোররা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কী করছে তা প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধান ও নিরীক্ষণের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধারাবাহিকভাবে পর্যালোচনা, আলোচনা এবং নির্দেশিকা প্রদান করা।

৪. ক্ষতিকারক বিষয়বস্তুর বিস্তার হ্রাস: কিশোরদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা ক্ষতিকারক কনন্টেন্টের পরিমাণ কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেমন—নিজেকে আঘাত বা নিজের ক্ষতি, ক্ষতিসাধন কিংবা ইটিং ডিসঅর্ডারের মতো কনন্টেন্ট, যা মনস্তাত্ত্বিকভাবে ক্ষতিকারক আচরণ করতে প্রভাবিত করে।

৫. অনলাইনে ঘৃণা ছড়ানো ও সাইবার বুলিং মোকাবেলায় পদক্ষেপ: অনলাইন বৈষম্য, কুসংস্কার, ঘৃণামূলক বক্তব্য ও সাইবার বুলিংসহ সাইবারহেট (অনলাইনে ঘৃণা ছড়ানো) সমস্যা মোকাবেলার জন্য পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

৬. মনিটরিং: শিশু-কিশোররা ঝুঁকিপূর্ণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছে কিনা, তা নিয়ে সচেষ্ট ও পর্যবেক্ষণের পরামর্শও দেয়া হয়েছে। 

৭. সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে ভারসাম্য: কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। 

৮. সামাজিক তুলনা এড়িয়ে চলা: সামাজিক মাধ্যমে অনেক সময় বাহ্যিক সৌন্দর্যের বিষয়ে কিশোরদের তুলনা করা হয়। যা নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। কিশোরদের এ ধরনের বিষয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। 


৯. সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারবিষয়ক অভিজ্ঞান: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের আগে, কিশোরদের নিরাপদ ও ভারসাম্যপূর্ণ আচারণে দক্ষ করার বিষয়কেও নির্দেশ করা হয়েছে। 


১০. গবেষণা কার্যক্রম সমর্থন: কিশোরদের বিকাশে সামাজিক মাধ্যমের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাবগুলো জানানো প্রয়োজন। আর এ বিষয়ে গবেষণার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণকেও অপরিহার্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


গবেষণায় আরো বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এককভাবে উপকারী বা ক্ষতিকর নয়। তবে কিশোরদের অনলাইন জীবন তাদের অফলাইন জীবনকে প্রতিফলিত ও প্রভাবিত করে। তাই এটি ব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য সুবিধার পাশাপাশি ঝুঁকিগুলো নিয়ে সচেষ্ট হওয়া জরুরি।

Post a Comment

Previous Post Next Post